শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ১০:৪০ অপরাহ্ন

শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ

শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ

বৃহস্পতিবার (২ মে) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহারিয়ার এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।

লিগ্যাল নোটিশে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মাহবুব হোসেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের (মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ) সচিব ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগকে বিবাদী করা হয়েছে।

নোটিশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সিলেবাস কমিয়ে মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালুর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়েছে: পবিত্র রমজান, ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখের ছুটি শেষে গত ২১ এপ্রিল স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা খোলার কথা থাকলেও দেশজুড়ে হিট অ্যালার্ট ও তাপপ্রবাহের কারণে তা এক সপ্তাহ পিছিয়ে যায়। তীব্র তাপপ্রবাহ আর হিট এলার্টের মধ্যেই গত ২৮ এপ্রিল স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা চালু হলে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফেরে। তবে প্রচণ্ড গরমে বিভিন্ন স্থানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর পাওয়া যায়। গরমে অসুস্থ হয়ে শিক্ষকসহ কয়েকজনের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন গত সোমবার হাইকোর্টের নজরে আনা হয়।

ওই প্রতিবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। আদেশে চলমান তাপপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন।

নোটিশে বলা হয়: আদেশের বিষয়ে আপনি বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কখন বন্ধ হবে, কীভাবে পরিচালিত হবে সংবিধান অনুসারে সেটা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার। সংবিধানের রুলস অব বিজনেসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সেই এখতিয়ার দেয়া হয়েছে। উচ্চ আদালতের সুয়োমোটো কিছু বিষয়ে নির্দেশনা বা আদেশ দেয়ার এখতিয়ার আছে। সেটাও সংবিধানস্বীকৃত।

কিন্তু রাষ্ট্রের যে প্রতিষ্ঠানের যে এখতিয়ার বা সেখানের মধ্যে থাকাটাই সবার জন্য সমীচীন। আপনার এমন বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে আপনি আদালতকে কী করতে হবে বা করা উচিত সেই উপদেশ দিয়েছেন; যা প্রকারান্তরে আদালত অবমাননার শামিল।

নোটিশে আরও বলা হয়, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থায় আদালতের আদেশ নিয়ে একজন আইনপ্রণেতা ও শিক্ষামন্ত্রী হয়ে আপনার এমন বক্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিব যদি জনদুর্ভোগ, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বিষয়টি মাথায় রেখে সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করতেন, তাহলে কখনোই বিচার বিভাগকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার বিষয়ে আদেশ দিতে হতো না।

লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে, রমজান মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রেখে শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের ধর্মীয় কার্যক্রম পালনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছিলেন। আবারও প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে ও হিট অ্যালার্টের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের কষ্ট ও ভোগান্তি তৈরি করেছেন।

আপনি নিজে (এসি) শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে কাজ করেন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসায় বসবাস করেন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়িতে চলাচল করেন। তাই আপনার কাছে হয়তো দাবদাহ কোনো সমস্যা বলে মনে হয় না।

নোটিশে বলা হয়: এসি বন্ধ রেখে সাধারণ মানুষের মতো বাস-রিকশায় চলাচল করে দেখুন, তাহলে বুঝতে পারবেন দাবদাহ কাকে বলে।

আইনজীবী আরও বলেন, আপনার স্থানে আমি শিক্ষামন্ত্রী হলে, ছয় মাসের মধ্যে পুরো বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে স্মার্ট শিক্ষাব্যবস্থায় পরিণত করার পাশাপাশি উন্নত দেশগুলোর মতো শিক্ষার্থীদের আয়ের ব্যবস্থাও চালু করতাম; যা আপনার মতো সনাতন চিন্তাধারার শিক্ষামন্ত্রীর পক্ষে বাস্তবায়ন কোনোদিনই সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে না।

বাংলাদেশের শিক্ষা কার্যক্রম হিটলারের স্টাইলে চালানোর চেষ্টা করে শিক্ষার্থীদের মনে পড়ালেখা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভীতি তৈরি করেছেন। আপনার কার্যক্রমে জনমনে ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপনার বিরুদ্ধে প্রচুর লেখা হচ্ছে।

জনদুর্ভোগ অনুধাবন করতে আপনি ব্যর্থ, সেই দায়ভার কাঁধে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




All Rights Reserved- 2019-2023
Design BY Positive It Usa
ThemesBazar-Jowfhowo