• [english_date] , [bangla_date] , [hijri_date]

হাওরের উড়াল সেতু হবে একটা আইকনিক প্রকল্প: পরিকল্পনামন্ত্রী

ভয়েস অফ বাংলাদেশ
প্রকাশিত February 5, 2022
হাওরের উড়াল সেতু হবে একটা আইকনিক প্রকল্প: পরিকল্পনামন্ত্রী

নিউজ ডেস্কঃ পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, সুনামগঞ্জের হাওরের ওপর দিয়ে উড়াল সেতু হবে একটা আইকনিক প্রকল্প। এ সেতু স্থাপিত হলে জেলায় অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে সাফল্য আসবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের নতুন মডেল স্থাপিত হবে। এছাড়া খুব অল্প সময়ের মধ্যে হাওরে উড়াল সড়ক নির্মাণ কাজও শুরু হবে।

গতকাল সন্ধ্যায় ‘হাওর এলাকায় উড়াল সড়ক ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গৃহীত স্কিম সংক্রান্ত’ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, হাওরে উড়াল সেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাথা থেকে এসেছে। এটা আমরা কখনো কল্পনাও করতে পারিনি। এই প্রকল্পটি আমরা অত্যন্ত স্পর্শকাতর জায়গায় করছি। হাওর হলো আমাদের মা, মায়ের বুকের ওপর দিয়ে কাজ হবে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী বারবার আমাদের সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি আমাদের বলেছেন, একটি হিজল-করচগাছও যেন নষ্ট না হয়, মাছের যেন কোনো ক্ষতি না হয়। তাঁর প্রতিটি নির্দেশনা মেনেই আমরা কাজ করব।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলার জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ, আইনজীবী ও সাংবাদিকদের নিয়ে এ প্রায় ৩ ঘণ্টাব্যাপি এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে হাওরে উড়াল সড়কের কাজ শুরু হবে। ভবিষ্যতে এ সড়কটি আমাদের রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদের জন্ম জেলা কিশোরগঞ্জের ইটনা-মিঠামইন সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। দুটি জেলাকে কীভাবে সংযুক্ত করা যায় বিষয়টি স্টাডি করা হচ্ছে।

এম এ মান্নান আরও বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর স্নেহ আছে, দায় আছে, দেশপ্রেম আপনার আমার চাইতে আলাদা। তিনি সবকিছু হৃদয় দিয়ে অনুভব করেন। হাজার হাজার স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা তৈরি করা হচ্ছে। আমাদের সবার উচিত শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়ানো।

বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী বলেন, ভোটের মাঠে না থেকে ভোট হতে দেব না। ধমক দিয়ে হঠকারী কোনো কথা না বলে আসেন,আলোচনা করেন। নির্বাচনে আসেন। ভোটের মাঠে না গিয়া ভয় দেখাইয়্যা মানুষকে আটকাতে পারবেন না। এসবে এখন আর কাজ হবে না। রাজনীতির নামে অপরাজনীতি করলে শক্ত হাতে তা প্রতিহত করা হবে।

জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন- সুনামগঞ্জ ৫ আসনের সংসদ সদস্য মহিবুর রহমান মানিক, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট, পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের পরিচালক এমরান হোসেন, প্রকল্প পরিচালক ও এলজিইডির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী গোলাম মৌলা, সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, বিজিবির কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল মাহবুবুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আলী আমজাদ, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মাহাবুব আলম, সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট রুকেস লেইস, জেলা  আ.লীগের সহসভাপতি রেজাউল করিম শামীম, তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সফর উদ্দিন, ধর্মপাশা উপজেলা চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রোকন,জামালগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল আল আজাদ প্রমুখ।

বক্তরা তাদের বক্তব্যে সেতুর সৌন্দর্য অবলোকন ও এতে যাতায়াতকারীদের নিরাপত্তার জন্য নিরাপত্তা বেষ্টনী, গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা, বজ্র নিরোধক দণ্ডসহ সবধরনের নিরাপত্তাবেষ্টনি গড়ে তোলার পরামর্শ দেন।

প্রসঙ্গত, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে তিন হাজার ৪৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে উড়াল সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি।

চলতি বছরের শুরু দিকে এ মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু হবে এবং ২০২৬ সালে উক্ত কাজ সমাপ্ত করার কথা রয়েছে।এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভপুর, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা উপজেলাসহ নেত্রকোনা জেলার কয়েকটি উপজেলার যোগাযোগের ক্ষেত্রে মাইলফলক সৃষ্টি হবে।

মতবিনিময় সভার শুরুতে হাওর এলাকার বর্তমান যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং  এ্যামুনেশনের মাধ্যমে উড়াল সেতু হওয়ার পরের দৃশ্য ভিডিওগ্রাফির মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়। ভিডিওগ্রাফি প্রদর্শন করেন মেগা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও এলজিইডির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী গোলাম মৌলা।