প্রকাশিত: ১২:৪৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৩, ২০২১
বিনোদন ডেস্কঃ হলিউড ও বলিউডের অনুসরণে ঢাকার চলচ্চিত্রশিল্পকে ঢালিউড বলে ডাকা হয়। আদতে শিল্প হিসেবে এটি কতটা প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছে, সেটা অনুধাবন করতে পারেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাই। বিশ্ব সিনেমার সুবিশাল ও উন্মুক্ত বাজারে বাংলাদেশের সিনেমা যেন কেবলই ‘অংশগ্রহণই বড় কথা’ বিবেচনায় অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে। আবার কেউ কেউ মনে করেন, অনেকটাই এগিয়েছে বাংলাদেশের সিনেমা। এর ফল পাওয়া যাবে শিগগিরই।
ঢাকার সিনেমা দেশের সব শ্রেণির কাছে একসময় গ্রহণযোগ্য ছিল। তবে বিদেশি ছবি আসা বন্ধ হতেই থেমে যায় প্রতিযোগিতা। প্রেক্ষাগৃহে বসে সপরিবার সিনেমা দেখার প্রচলিত নিয়ম ভেঙে যায় অশ্লীলতা ও কাটপিসের যুগে। সেই থেকে শুরু হলো সিনেমার অবক্ষয়।
এ প্রসঙ্গে দীর্ঘশ্বাস ফেলে জ্যেষ্ঠ পরিচালক কাজী হায়াৎ বলেন, ‘সিনেমায় আমরা যতটা অগ্রসর ছিলাম, সেই তুলনায় পিছিয়ে গেছি। প্রতিযোগিতা ছাড়া কেউ এগোতে পারে না। আমরা প্রতিযোগিতার বাজারে ঢুকিনি। আমাদের উচিত ছিল বাজারটা খুলে দেওয়া। আমরা ঘরের ভেতর নিজেকে আটকে রেখেছি।’ এ ছাড়া আজকের অবস্থার জন্য প্রতিভাবান চিত্রনাট্যকার, প্রযোজক ও পরিচালক কম বলেও স্বীকার করলেন তিনি।
সিনেমা নির্মাণ তুলনামূলক কমে গেছে। মান ও সংখ্যা এতই কম যে একে একে বহু প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ করে দিতে হয়েছে। মানুষ ক্রমে ঝুঁকেছে বিদেশী ভাষার সিনেমায়। পাশাপাশি ইরান, তুরস্কের মতো দেশগুলোর বাংলায় ডাব করা ধারাবাহিকে বুঁদ হয়েছে মানুষ। নির্মাতারা বলছেন, পর্যাপ্ত বাজেট নেই, শিল্পী নেই, চালানোর মতো পর্যাপ্ত হল নেই বলেই বাংলাদেশের সিনেমা এগোচ্ছে না।
দেশে সিনেমা নির্মাণের কারিগরি সুযোগ-সুবিধা নিয়েও সন্তুষ্ট নন নির্মাতারা। বিগত দিনগুলোতে আলোচিত ও পুরস্কৃত সিনেমাগুলোর পরিচালকদের কাছ থেকে জানা গেছে, গান, আবহ সংগীত, ডাবিং, সম্পাদনা, রং পরিমার্জন (কালার কারেকশন), পলি সাউন্ডের মতো কাজগুলো ভারত থেকে করিয়ে আনেন অনেকে। যদিও এর প্রায় সব সুবিধাই আছে এফডিসিতেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নির্মাতা বলেন, ‘বাংলাদেশে পেশাদারির অভাব আছে। এ কারণে ঢাকায় এ কাজগুলো করতে যথেষ্ট আস্থা পাই না।’
নির্মাণ উৎকর্ষে ভারতীয় বাংলা সিনেমা আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে এ দেশের দর্শকের কাছে। বলা যায়, পশ্চিমবঙ্গের সিনেমার একটা ভালো বাজার বাংলাদেশ। হয়তো এ কারণেই ঢাকার শাকিব খান, জয়া আহসান, মোশাররফ করিমরা নিয়ম করেই কাজ করছেন পশ্চিমবঙ্গে। যদিও সেখানকার তারকা শিল্পীদেরও নিয়মিত পাওয়া যায় ঢাকার সিনেমায়।
চলচ্চিত্র নির্মাণ কমে গেলেও এফডিসির ভেতরে সক্রিয় চলচ্চিত্রের বেশ কয়েকটি সমিতি। প্রযোজনায় নিয়মিত না থাকলেও প্রযোজক সমিতি তাদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। গতকাল শুক্রবারই নির্বাচন করল পরিচালক সমিতি। এ ছাড়া রয়েছে শিল্পী সমিতি। এ সমিতিগুলো নিয়মিত নির্বাচন, বনভোজন ও সভা করে। তবে সিনেমায় এদের সদস্যদের খুব কমই দেখা যায়। এ প্রসঙ্গে পরিচালক নেতাদের বক্তব্য, সিনেমা হল ও পরিবেশ ফিরলেই কাজ করবেন তাঁরা।
অন্যদিকে প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ হয়ে যাওয়া ও সিনেমার বেহাল অবস্থার মধ্যেও জ্বলে আছে আশার আলো। সিনেমার নতুন মঞ্চ হিসেবে যাত্রা শুরু করেছে অনলাইন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম। ঘরে বসেই এসব প্ল্যাটফর্ম থেকে সিনেমা উপভোগ করতে পারছেন দর্শক। সিনেমা নির্মাণ, ক্রয় ও বিপণনে পর্যাপ্ত অর্থ ব্যয় করছে প্রতিষ্ঠানগুলো। বাংলাদেশের নির্মাতাদের কেউ কেউ এখানে সাফল্যের স্বাক্ষর রাখতে শুরু করেছেন। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক উৎসবগুলোতে প্রদর্শনীর জন্য জায়গা করে নিতে শুরু করেছে ঢাকার নির্মাতাদের ছবি।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র প্রসঙ্গে নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘অনেক সম্ভাবনা নিয়ে অসম্ভবের মুখে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের সিনেমা। আমাদের আছে একটা বিশাল এবং বিচিত্র দর্শকশ্রেণি, যারা বিভিন্ন রকম সিনেমা দেখতে প্রস্তুত। আছে দারুণ প্রতিভাবান তরুণ ফিল্মমেকার। অথচ আমরা এখনো অসম সেন্সরের মুখোমুখি। যুগটা নেটফ্লিক্সের, অথচ আমাদের জন্য কড়া সেন্সর! বড় শহরগুলোতে এখনো মাল্টিপ্লেক্স নিয়ে যেতে পারিনি আমরা। এ দুটো সমস্যার সমাধান হলে সিনেমাকে আর কারও কাছে হাত পাততে হবে না।’
Editor In Chief : Mynul Hasan
Editor : Poliar Mohammad Wahid
Managing Editor : Muhibur Rahman Raju
CEO : Mahfuzur Rahman Adnan
Phone : 7188237535,
7188237538 (Fax)
Email : voiceofbangladesh.info@gmail.com
JOINTLY PUBLISHED FROM TORONTO, CANADA AND NEW YORK, USA.
A Concern Of Positive International Inc USA.
All Rights Reserved -2019-2021
Design and developed by Positive IT USA