প্রকাশিত: ১০:০২ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২১
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে, দেশে ২০০১ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪৮.১ শতাংশ। বর্তমানে সরকারের নানামুখী উদ্যোগে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমেছে দুই-তৃতীয়াংশ। নভেল করোনাভাইরাস মহামারিতে এ উদ্যোগে কিছুটা ভাটা পড়লেও, দরিদ্রের হার কমিয়ে আনতে নানা কর্মসূচি চলমান রেখেছে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর।
সরকারের নেওয়া সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলোর মধ্যে আছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘আমার বাড়ি, আমার খামার প্রকল্প’, ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন গৃহহীনদের সরকারি উদ্যোগে বড় নির্মাণযজ্ঞ ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প-২’, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল কাউন্সিল সার্ভিস প্রকল্পের অধীনে বেকারদের কর্মসংস্থান ব্যবস্থা করা; সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের ভাতা’ প্রদান এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে নারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে স্বাবলম্বী করে তোলা হচ্ছে। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মো. রেজাউল আহসান প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘সরকার চলতি বছরের মধ্যে দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আড়াই কোটিতে নামিয়ে আনতে কাজ করছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীন নানা কর্মসূচির অনুষঙ্গ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য কমিয়ে আনা হবে। আমার মন্ত্রণালয়ের অধীন আমার বাড়ি, আমার খামার প্রকল্প তার একটি।’
সচিব বলেন, ঋণ দেওয়ার মাধ্যমে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরি করে প্রতি উপজেলা ও জেলায় একটি করে অফিস কাম অনলাইন বিক্রয়কেন্দ্র স্থাপনেরও লক্ষ্য রয়েছে। গ্রাম উন্নয়ন তহবিল গঠনের পর এখন তহবিলসহ সমিতি পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের অধীনে স্থানান্তর করে আর্থিক সেবা অব্যাহত রেখে কর্মকা- পরিচালনা করা হচ্ছে। এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে দেশের ৬৪ জেলার ৪৯২টি উপজেলার ৪ হাজার ৫৫০টি ইউনিয়নে। তিনি আরো বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে হতদরিদ্র মানুষের হার ২১ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমে ২০২১ সালের মধ্যে ১০ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করছে সরকার।
প্রকল্প পরিচালক আকবর হোসেন বলেন, ‘দেশব্যাপী আমার বাড়ি, আমার খামার প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে। আশা করছি, ২০২১ সালের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারব। করোনার কারণে অনেক দিন এ প্রকল্পের কাজ বন্ধ ছিল। এখন চলছে।’
এদিকে যুব উন্নয়নে কতগুলো কর্মসূচি কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে আলোচিত ছিল ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি। বর্তমানে এই সার্ভিস সারা দেশে রয়েছে। তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে অসামান্য সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকে ‘চ্যাম্পিয়ন অব স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফর ইয়ুথ’ সম্মাননায় ভূষিত করেছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আখতার হোসেন বলেন, ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচিটি ৩৭ জেলার ১২৮টি উপজেলায় কার্যক্রম সম্প্রসারিত হয়েছে। উচ্চমাধ্যমিক ও তদূর্ধ্ব শিক্ষিত এবং ২৪-৩৫ বয়সসীমায় কর্মপ্রত্যাশী যুবক-যুবতীরা এর উপকারভোগী। তারা তিন মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণে দৈনিক ১০০ টাকা হারে এবং দুই বছরের অস্থায়ী কর্মসংযুক্তিকালে প্রতিদিন ২০০ টাকা হারে কর্মভাতা পেয়ে থাকেন। ২০১৯-২০ অর্থবছর পর্যন্ত ২ লাখ ২৯ হাজার ৯১০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। অস্থায়ী কর্মসংযুক্তিপ্রাপ্ত ২ লাখ ২৭ হাজার ৫৭৫ জন। সচিব বলেন, ন্যাশনাল সার্ভিস নীতি দ্বারা এ কর্মসূচি পরিচালিত হয়। এর বাস্তবায়নযোগ্য উপজেলা নির্ধারিত হয় সরকার অনুমোদিত ‘দারিদ্র্য ম্যাপ’ অনুসারে।
দেশের দুস্থ, অসহায়, প্রতিবন্ধী, হিজড়া জনগোষ্ঠীসহ কর্মহীন শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে ভাতা দিচ্ছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি, জেলা সমাজকল্যাণ পরিষদ, প্রাকৃতিক ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, ভিক্ষাবৃত্তি নিরসনে উপজেলা সমাজকল্যাণ পরিষদের সারা দেশে ১ হাজার ১৯২টি ইউনিট অফিসে ২২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ঢাকা জেলায় প্রায় তিন কোটি টাকাসহ প্রতি জেলায় জনসংখ্যা ও দারিদ্র্যের হার বিবেচনায় ২০ লাখ থেকে ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ ছাড়া চলতি বছরে বিশেষ অনুদান হিসেবে জেলাপর্যায়ে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সমাজসেবা অধিদপ্তর।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী এ সম্পর্কেবলেন, অভাবী মানুষের সংসারে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীরা একটা বোঝা। প্রধানমন্ত্রী দেশকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে নিয়ে যেতে তার ‘ভিশন টোয়েন্টি টোয়েন্টি’ ঘোষণা করেছেন। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, এটা বাস্তবায়ন করতে হলে দারিদ্র্য নিরসন করতে হবে। তাই পরিবারের জন্য বোঝা ব্যক্তিদের বিভিন্ন ভাতার আওতায় এনেছে সরকার। এতে পরিবারের ওপর এসব ব্যক্তির যেমন নির্ভরশীলতা কমছে, তেমনি এসব উদ্যোগের মাধ্যমে দারিদ্র্যের হার ক্রমান্বয়ে কমে আসছে।
Editor In Chief : Mynul Hasan
Editor : Poliar Mohammad Wahid
Managing Editor : Muhibur Rahman Raju
CEO : Mahfuzur Rahman Adnan
Phone : 7188237535,
7188237538 (Fax)
Email : voiceofbangladesh.info@gmail.com
JOINTLY PUBLISHED FROM TORONTO, CANADA AND NEW YORK, USA.
A Concern Of Positive International Inc USA.
All Rights Reserved -2019-2021
Design and developed by Positive IT USA